অবশেষে চ্যাঞ্চল্যকর তথ্য ফাসঁ করলো মিন্নি ‘পুলিশ যা বলতে বলেছে তাই বলেছি’

বরগুনায় আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার নিহতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি বলেছেন, আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে পুলিশ তাকে তিনি বলেছেন। এমনকি পুলিশের কথা না শুনলে পুনরায় রিমান্ডে নেয়ার হুমকিও দেয়া হয়েছিল তাকে। পরিবার ও বরগুনার স্থানীয় সংবাদ কর্মীদের কাছে এমনই অভিযোগ করেছেন মিন্নি নিজেই।
তবে পুলিশ এ অভিযোগ পুরোপুরি নাকচ করেছে।

গতকাল শনিবার সকালে পরিবারের সদস্যরা জেলগেটে মিন্নির সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে যান স্থানীয় কয়েকজন সংবাদ কর্মী। তাদেরকে মিন্নি জানান, তিনি খুবই অসুস্থ, ঠিকভাবে দাঁড়িয়ে কথা বলতে পারছেন না। ওইসময় পরিবার ও সাংবাদিকদের এসব অভিযোগ করেন মিন্নি।

মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরও জানান, পরিবারের ৮ সদস্য বরগুনা জেলা কারাগারে তার মেয়ের সঙ্গে দেখা করেছেন। এ সময় মিন্নি বলেন, আমি অসুস্থ। দাঁড়িয়ে কথা বলতে পারছি না। ‘রিমান্ড কি এটা তোমরা বোঝ না?’ এ বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন মিন্নি।

এদিকে, মোজাম্মেল বলেন, মিন্নির কথাও ঠিকভাবে বোঝা যাচ্ছে না। রিমান্ড মানে সুস্থতা না। জেলের গ্রিল ধরে দাঁড়াতেও ওর কষ্ট হচ্ছিল। শরীরে ফিটনেস নেই, শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে।

মিন্নির বাবা বলেন, আমি বিভিন্নভাবে চাপে আছি, এখন আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে চলছি। আল্লাহ যা করেন। তবে মিন্নির এখন চিকিৎসা খুব প্রয়োজন।

তবে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পুলিশ পরিদর্শক হুমায়ুন কবির বলেন, তারা নিয়ম অনুযায়ী মিন্নিকে আদালতে হাজির করেছেন। তিনি আদালতে স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিয়েছেন। তাকে ভয়ভীতি দেখালে তিনি সেটা আদালতে বলতে পারতেন।

হুমায়ুন কবির আরো বলেন, এ ধরনের আসামিরা পরিবারের সান্নিধ্য পেলে এরকম কথা বলে থাকেন।

মিন্নিকে আইনি সহায়তা দিতে বরগুনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহবুবুল বারী আসলামকে নিয়োগ দিয়েছে তার পরিবার।

তিনি জানান, আজ রোববার আদালতে মিন্নির জামিন আবেদন করা হবে।

এদিকে মিন্নিকে গ্রেপ্তার করার পর বাড়ি থেকে পুলিশ সদস্যদের প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে শুক্রবার সন্ধ্যায় মিন্নিকে কারাগারে পাঠানোর পর থেকে বাড়ির সামনে পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা আবারো অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।

রিফাত হত্যা মামলায় গত ১৬ জুলাই মিন্নিকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ১৭ জুলাই বরগুনা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তবে রিমান্ড শেষ হওয়ার ২ দিনের মাথায় মিন্নি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ায় তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।